সর্বশেষঅন্যান্য

সরকারি সার কারখানা চালুর আগে ঋণ পরিশোধের চাপ

সরকারি সার কারখানা চালুর আগে ইউরিয়া চিনি কারখানা উৎপাদনে যাওয়ার আগেই সরকারকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু করতে হবে।

সরকারি

সরকারি কারখানা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাসের কোনো ব্যবস্থা নেই। পরীক্ষামূলক প্রয়োজনে নমুনা কারখানা বন্ধ করে নতুন কারখানায় গ্যাস দেওয়া হয়েছে।আরও সমস্যা আছে। কারখানা থেকে কাঁচামাল সরবরাহের জন্য রেললাইন নির্মাণের কথা রয়েছে। কিন্তু রেললাইনের মূল কাজ এখনো শুরু হয়নি।

এর মধ্যে ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া চিনি কারখানার উদ্বোধন হবে ১২ নভেম্বর। এর নির্মাণে খরচ হয়েছে ১৫.৫ হাজার কোটি টাকা। গ্যাসের নিশ্চয়তা না থাকা সত্ত্বেও বিপুল ব্যয়ে কারখানা নির্মাণ, কারখানা চালু হওয়ার আগেই ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ এবং একটি কারখানা বন্ধ রেখে অন্য কারখানায় গ্যাস সরবরাহের যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার একীভূতকরণের মাধ্যমে ২০২০ সালে ‘ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০,৪৬০কোটি টাকা। কারখানাটি ২০২২ সালে নির্মিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু মেয়াদ বেড়েছে দুই গুণ। ব্যয় বেড়েছে ১৫.৫ হাজার কোটি টাকা।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন (বিসিআইসি) কারখানাটি নির্মাণ করেছে। সরকারি সংগঠনের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সম্প্রতি নরসিংদীতে দুটি চিনির কারখানা ছিল। দুটি কারখানায় প্রতিদিন ৬ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যেত। ওই পরিমাণ গ্যাসের প্রাপ্যতার কথা মাথায় রেখে নতুন গ্যাস প্লান্ট নির্মাণ করা হয়। তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী তিথাস গ্যাসের ব্যবস্থা করেছেন তারা।

সরকারি

কিন্তু ‘গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড’ গ্যাস উৎপাদনকারী কারখানা বন্ধ করে দেয়।সরকারি সিআইসির চারটি ইউরিয়া কারখানার নমুনা। গ্যাস সংকটে এখন চারটি কারখানা বন্ধ। বিসিআইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে চারটি কারখানা ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করেছে। চাহিদা: প্রতি বছর ২৬লাখ টন। বাকিটা আমদানি করতে হবে।ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার সরকারি কারখানার একীভূতকরণের মাধ্যমে ২০২০ সালে ‘ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০,৪৬০ কোটি টাকা। কারখানাটি ২০২২ সালে নির্মিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু মেয়াদ বেড়েছে দুই গুণ। ব্যয় বেড়েছে ১৫.৫ হাজার কোটি টাকা।

বিসিআইসি জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (ডিজিবিআইসি), ব্যাংক অব টোকিও লিমিটেড ইউএফজে লিমিটেড এবং হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি) থেকে ১৯২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করে। বাকি ৪ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার।

সরকারি কারখানার জন্য বাণিজ্যিক ঋণ নেওয়া হয়েছে, যার সুদের হার বেশি (৬৪ শতাংশ)। শর্তগুলো কঠিন। বিশ্বব্যাংক, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), এশা ইউন্যান্বন বাং (এডিবি) এর মতো উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা থেকে সাধারণত কম সুদে (২ শতাংশ) ঋণ পাওয়া যায়। শর্তগুলো শিথিল থাকে।

সরকারি নতুন কারখানায় বছরে ৯ লাখ ২৪ হাজার টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দেশের বার্ষিক চাহিদার প্রায় ৩৮ শতাংশ।
দৈনিক চাহিদা: ৭ কোটি ২০ লাখ ঘনফুট গ্যাসসরকারি

বিসিআইসি সূত্রে জানা গেছে, ঘোড়াশাল পলাশ চিনি কারখানা চালাতে দৈনিক ৭ কোটি ২০ লাখ ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। গত ১২ অক্টোবর পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর পর এখন প্রতিদিন প্রায় ৬ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। এতে যমুনা সার কারখানা বন্ধ করে বন্ধ করা হচ্ছে ৪ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট।

ঘোড়াশাল পলাশ সর কারখানার প্রকল্প পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, কারখানাটি উৎপাদনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না এটা সত্য। তবে প্রথমে এত গ্যাসের প্রয়োজন হবে না। কারণ, প্রাথমিকভাবে চালু হওয়ার পর কারখানার ক্ষমতার ৬৫ শতাংশ ব্যবহার করা হবে।

১৭আগস্ট অনুষ্ঠিত এই প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির ১৩তম সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায় যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ বিসিআইসির কাছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা পাবে। সূত্র জানায়, ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় বিসিআইসিকে গ্যাস দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা খুবই সতর্ক।সরকারি তবে ভারতের মহাব্যবস্থাপক লখনউ হায়দার মুলতুবি বিলের বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি প্রথম প্রথমকে বলেন, গ্যাসের সংকট রয়েছে। ঘোড়াশাল পলাশ সর কারখানায় চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস দেওয়ার আলোচনা চলছে।

সরকারি কারখানা উৎপাদনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না এটা সত্য। তবে প্রথমে এত গ্যাসের প্রয়োজন হবে না। কারণ, প্রাথমিকভাবে চালু হওয়ার পর কারখানার ক্ষমতার ৬৫ শতাংশ ব্যবহার করা হবে।রাজিউর রহমান, ঘোড়াশাল পলাশ চিনি কারখানার প্রকল্প পরিচালক রেললাইনের মূল কাজ শুরু হয়নি কারখানায় উৎপাদিত চিনির ৪০ শতাংশ রেলপথে পরিবহন করতে হয়। এ জন্য ঘোড়াশাল রেলস্টেশন পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করতে হবে।

প্রকল্প পরিচালক রাজিউর রহমান মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, রেললাইন নির্মাণের জন্য আমরা বাংলাদেশ রেলওয়েকে ২৬৫ কোটি টাকা দিচ্ছি। কিন্তু কাজের খবর নেই।কারখানা সূত্রে জানা গেছে, রেললাইনের মাত্র ৫০ কিলোমিটারের চুক্তি চূড়ান্ত করতে পেরেছে রেলওয়ে। বাকি অংশের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মির্জা  বিসিআইসি পর্যায়ক্রমে টাকা দিয়েছে। টাকা পাওয়ার পর টেন্ডার ডাকা হয়। যে কারণে দেরি হচ্ছে। পুরো কাজ শেষ করতে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগবে।সরকারি দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে প্রায়ই মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা যায়। এত বড় কারখানা যদি বিশাল খরচে তৈরি হয় এবং ইউরিয়া আমদানি করতে হয়, তাহলে বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

সিপিডির বিশেষ ফেলো মোহাম্মদফিজুর রহমান কিস্তি পরিশোধ শুরু হয় সরকারি কারখানা চালু হওয়ার আগেই ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ শুরু হয়েছে বিসিআইসির ওপর। গত ১৩সেপ্টেম্বর, ৫২২ কোটি টাকার প্রথম কিস্তি দেওয়া হয়েছিল। কারখানায় কোনো আয় না থাকায় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সরকারের উচ্চপর্যায়ের দ্বারস্থ হয়ে এ অর্থের ব্যবস্থা করা হয়।

আরও পড়ুন

রাজশাহীর পদ্মায় ধুম কাছিম অনেক বড় আকৃতির

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button