সর্বশেষবিশেষ

চালের দাম বাড়ায় সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করেছেন মিলাররা

দাম বাড়ার কারণে আমন-২২ মওসুমে সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করেছিলেন গুরুদাসপুরের মিলাররা।

চালের দাম বাড়ার কারণে আমন-২২ মওসুমে সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করেছিলেন গুরুদাসপুরের মিলাররা। মাঝখানে বোরো মওসুম পার হয়েছে।

চালের

চলতি মাসেই আবারও শুরু হবে আমন মওসুম। আসন্ন এই মওসুমে চাল সংগ্রহের জন্য সরকারের সঙ্গে এখানো মিলারদের চুক্তি হয়নি।ফলে স্থানীয়ভাবে চাল সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। চুক্তি না হলে, বিগত দুই মওসুমের মতো আশপাশের জেলা-উপজেলার ওপর নির্ভর করতে হবে।

মিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত আমন-২২ মওসুমে খোলা বাজারে চালের দর ছিল প্রতি কেজি ৫০ টাকা। ওই সময় সরকারি মূল্যে ছিল ৫০ টাকা। ফলে মিলাররা সরকারিভাবে চাল বিক্রিতে অনিহা প্রকাশ করেন। বর্তমানে চালের বাজার মূল্যে ৪৬ থেকে ৪৭ টাকা। অথচ সরকারি মূল্য এখন পর্যন্ত ৪৪ টাকা কেজি ধরা আছে। এ কারণে আর্মন মওসুমেও সরকারের সঙ্গে মিলারদের চুক্তি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিতে পারে।

গুরুদাসপুর খাদ্য কর্মকর্তা ও খাদ্য গুদামের তথ্য মতে, সরকারের সঙ্গে গুরুদাসপুরের দুইটি অটো মিলসহ ৪৪টি হাসকিং মিলের চুক্তি ছিল। চাউলকল মালিক সমিতি সবশেষ বোরো-২২ মওসুমে ৪২ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৪৩৪ মেট্রিকটন চাল সরকারের কাছে বিক্রি করে। এরপর খোলাবাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমন-২২ মওসুমে চুক্তি ভঙ্গ করেন ৩৩ জন মিলার। ফলে ওই মওসুমের ১ হাজার ২৬২ মেট্রিকটন লক্ষ্যমাত্রার জায়গায় মাত্র পাঁচজন স্থানীয় মিলারের কাছ থেকে ৫৭ টন চাল পাওয়া যায়। ওই মওসুমে চাহিদা মিটাতে সংকটে পরে স্থানীয় প্রশাসন। মিলারদের চুক্তি ভঙ্গের ফলে বোরো-২৩ মওসুমেও স্থানীয়ভাবে চাল পাওয়া যায়নি।

চালের দাম বাড়ায় সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করেছেন মিলাররা:

তথ্য মতে, চলতি বছরের মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বোরো মওসুমের চাল সংগ্রহ শুরু হয়। এই মওসুমে সরকারি বরাদ্দ ধরা হয় প্রায় ২ হাজার টন। এর মধ্যে স্থানীয় ৭ জন মিলারের কাছ থেকে ৪৩৫ এবং আশপাশের সিংড়া, নওগাঁও, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মুলাডুলি ও বনপাড়া থেকে ১ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করে সংকট মোকাবিলা করা হয়।

চাল

অনুসন্ধান বলছে, গুরুদাসপুর পৌর এলাকায় প্রায় ১১১টি ব্রয়লার চাতাল রয়েছে। রয়েছে দুটি অটো এবং দুইটি সেমিঅটোসহ ১৩৪টি চালকল। এসব চালকলের মধ্যে আসন্ন আমন মওসুমে নতুন করে চুক্তিযোগ্য দুইটি অটো মিলসহ ৪৪টি হাসকিং মিলের তালিকা প্রস্তুত করেছে চাল ক্রয় কমিটি। তবে আমন সংগ্রহের জন্য এখনো পর্যন্ত এসব মিলারদের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়নি। আমন মওসুম শুরুর কথা রয়েছে চলতি মাসের শেষের দিকে।

কৃষি অফিস বলছে, গুরুদাসপুরে বহুরজুড়েই রোপা আমন, বোনা আমন, ইরিসহ বেশ কয়েকটি জাতের ধান উৎপন্ন হয়। বছরে উপজেলায় স্থানীয়ভাবে চাল উৎপাদন হয় ৬৪ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন। অথচ স্থানীয় চাহিদার ২ হাজার মেট্রিকটন চাল সরকারি দরে বিক্রি করছেন না মিলাররা।

গুরুদাসপুর চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ইত্তেফাককে বলেন, এক সময় চাল বিক্রিতে উপজেলায় সক্রিয় সিন্ডিকেট কাজ করতো। এখন সেই সিন্ডিকেট নেই। মিলাররাই সরাসরি চাল বিক্রি করতে পারছেন। শুধু চালের দর নিয়ে তাদের আপত্তি আছে। সরকারিভাবে দর বাড়ানো হলে ব্যবসায়িরা চাল বিক্রিতে আগ্রহী হবেন।

গুরুদাসপুর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ইত্তেফাককে বলেন, আমন মওসুমে চুক্তির জন্য ৪৪টি মিলের তালিকা পাঠানো হয়েছে। মিলাররী যদি চুক্তিবন্ধ না হন, তাহলে স্থানীয় চাহিদা যেটাতে সংকটে পড়তে হতে পারে। তবে তারা মিলারদের সঙ্গে চুক্তি করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

আরও পড়ুন

লাগামহীন চালের দাম ও চিনির দাম, কুলাতে পারছেনা জনগণ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button