নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় আবারও গ্যাসের তীব্র সংকটে পড়েছেন গ্রাহকরা। সেই সঙ্গে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের মাত্রাও।
নারায়ণগঞ্জ গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে বন্দরবাসীর মধ্যে গভীর ক্ষোভ বিরাজ করছে। জাতীয় গ্যাস পাইপলাইনে নিম্নচাপের কারণে সাময়িকভাবে এ সংকট দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের মাত্রা বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
জানা গেছে, অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন না হওয়ায় সমস্যায় পড়ছেন গৃহিণীরা। হোটেলে খাবার রান্না ও কাঠ কেনার বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে কর্মজীবীদের। বন্দরে গ্যাসের এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। প্রতি মাসে বিল পরিশোধ করেও প্রয়োজনীয় গ্যাস পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
বন্দরের সোনাকান্দা, দড়ি সোনাকান্দা, মাহমুদনগর, বেপারীপাড়া, ইনায়েতনগর, নোয়াদা, লক্ষ্মণখোলা, চিতাশাল, রূপালী, আমিন, মদনগঞ্জ, কুড়িপাড়া, মদনপুরসহ আশপাশের এলাকার মানুষ এ সময় দুর্ভোগে পড়েন। অনেক বাড়িতেই এখন মাটির চুলায় খাবার রান্না করতে হয়। ভুক্তভোগীরা জানান, গ্যাস সংকটের কারণে এখন ২০০ টাকার পরিবর্তে ৪০০ টাকা দরে কাঠ কিনতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শিশু ও বৃদ্ধদের বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েছে। গ্যাস-বিদ্যুতের এমন সংকটে বন্দরের মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
লক্ষ্মণখোলার এক গৃহবধূ জানান, গ্যাসের সংকটের কারণে তিনি বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের দাবি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হোক। একই সঙ্গে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিদ্যুতের লোডশেডিংয়েরও অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোনাকান্দার এক বাসিন্দা জানান, গ্যাসের সমস্যায় প্রতি মাসেই তাকে সমস্যায় পড়তে হয়। অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের নামে গ্রাহকদের শ্বাসরোধ করছে তিতাস গ্যাসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা।
তারাই কিছু বাড়ি, কারখানা ও ইটভাটায় অবৈধভাবে গ্যাস সরবরাহ করে এবং কাঙ্খিত ঘুষ না পেলে আবার কেটে দেয়। অনেক সময় বৈধ গ্রাহকের লাইনও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বন্দর এলাকায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন অবৈধ কারখানা। এছাড়া গ্যাসের অবৈধ ব্যবহারও বেড়েছে। ফলে বৈধ গ্যাস গ্রাহকরা গ্যাস পাচ্ছেন না। তবে অভিযান চালিয়েও গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না। এর আগেও ভুক্তভোগীরা একাধিকবার তিতাস গ্যাসের এমডি ও ডিএমডির সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি অবহিত করেছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম উসমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করেছে। এরপর কিছুদিন সমস্যা মিটলেও পরে আবার আগের মতো অবস্থা হয়। এদিকে সোনারগাঁ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের একাধিক সূত্র জানায়, গ্যাসের চাপ বেশি হলে ওই এলাকায় ঠিকমতো গ্যাস পৌঁছাতে পারে। কিন্তু নিম্নচাপের কারণে সব এলাকায় গ্যাস পৌঁছাচ্ছে না। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে আশ্বাস দেন। কর্মকর্তারা আরো জানান, অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।