জীবনযাপনসর্বশেষ

দুই খর্বাকৃতির বিয়ে। ৩৮ ইঞ্চি আব্বাস বনাম ৩৭ ইঞ্চি সোনিয়া

৩৭ ইঞ্চি উচ্চতার সোনিয়াকে বিয়ে করলো ৩৮ ইঞ্চি উচ্চতার আব্বাস শেখ (২৫) নামের বাগেরহাটের খর্বাকৃতি এক যুবক।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে খুলনার ডাকবাংলা এলাকার সেলিম গাজীর মেয়ে খর্বকৃতি সোনিয়া খাতুনের (২০) সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দুই পরিবারের সম্মতিতে ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী এক লাখ টাকা ব্যয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।

নববিবাহিত আব্বাস শেখ রামপাল উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের আজমল শেখের ছেলে। সে রামপাল সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার নববিবাহিত স্ত্রী সোনিয়া খাতুন খুলনার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তার উচ্চতা ৩৭ ইঞ্চি।

খর্বাকৃতি
ছোটবেলা থেকেই খর্বাকৃতি আব্বাসের উচ্চতা খুবই কম। যার কারণে বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, সহপাঠী এমনকি আত্মীয়-স্বজনের কাছেও তিনি সবসময় হাসির পাত্র ছিলেন। মানুষের হাসি-ঠাট্টা ও বাধা-বিপত্তিকে পেছনে ফেলে তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যান। গ্রাজুয়েশন শেষ করে স্নাতক শেষ করতে চান তিনি। স্ত্রীকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করবেন বলে জানান আব্বাস শেখ।

তিনি বলেন, শারীরিকভাবে অক্ষম বলে অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতেন। কারো কথায় পাত্তা দিতাম না। বন্ধুরা বলতো আমি কখনো বিয়ে করবো না। আমার কিছুই হবে না। আল্লাহর রহমতে বিয়ে করেছি। আমি শান্তিতে বসবাস করব।

খর্বাকৃতি

খর্বাকৃতি সোনিয়াকে কীভাবে পেলেন জানতে চাইলে খর্বাকৃতি আব্বাস বলেন, দেড় বছর আগে পরিবার তাকে বেছে নিচ্ছে। আমি এই বছর (২০ অক্টোবর) আমার দুই ফুফুর সাথে সোনিয়াকে দেখতে গিয়েছিলাম এবং আমি তাকে পছন্দ করেছি। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে স্ত্রীকে বাসায় নিয়ে আসছি। পরিবারের পছন্দে বিয়ে করেছি, আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা যেন সুন্দর জীবনযাপন করি।

খর্বাকৃতি আব্বাসের মা নাজমা বেগম বলেন, এক হাতে বই আর অন্য হাতে ছেলে নিয়ে স্কুলে যাই। অনেক কষ্টে মানুষের কথা শুনে ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। আমার দুই মেয়ে ও একমাত্র ছেলে আব্বাস। আমি অনেক কষ্টের ধন, আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।খর্বাকৃতি

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আশরাফুল আলম বলেন, শারীরিকভাবে একটু খাটো হলেও আব্বাস একজন মিশুক ছেলে। তাকে বিভিন্ন সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখেছি। বিয়েতে দাওয়াত পেয়েছিলাম। তার গায়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত ছিলাম। আমি নবদম্পতিকে অভিনন্দন জানাই। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে হাসাহাসি না করে তাদের প্রতিটি কাজে উৎসাহিত করতে হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আর সমাজের বোঝা নয়, সঠিকভাবে লালন-পালন করলে তারা সম্পদ হতে পারে। প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আরো পড়ুন,
মাঝখানে আমি ,দুই পার্শ্বে দুই ট্রেন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button